চুড়িহাট্টা ট্রাজেডির বছর পূর্তি, নিহতদের স্মরণে স্বজনদের ক্ষোভ

চকবাজারের চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির এক বছরেও দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন হয়নি পুরান ঢাকায়। কাঁচামাল গুদাম ব্যবস্থাপনায় নেয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। এ নিয়ে ক্ষোভ পুরান ঢাকার মানুষের। তাদের প্রশ্ন নিমতলী, চুড়িহাট্টার মতো কত দুর্ঘটনা ঘটলে টনক নড়বে প্রশাসনের? চুড়িহাট্টার বছর পূর্তিতে নিহতদের স্মরণ করছে স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই চুড়িহাট্টায় ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে এসে উপস্থিত হতে থাকেন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের আত্মীয়, স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা। তারা হারানো স্বজনদের স্মরণে ছবি হাতে একত্রিত হন।

এদিন সকালে সেই ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে ভিড় করতে দেখা যায় নিহতদের স্বজন এবং স্থানীদের। জমায়েত হওয়া স্বজনদের মধ্যে অনেকে ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিকের বিচারও দাবি করেন। পরে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে একাত্মতা জানিয়ে স্বাক্ষর করতে দেখা যায় তাদের।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এক বছর হয়ে গেলেও তারা কোনো ধরনের সরকারি ও বেসরকারি সাহায্য এখনো পাননি। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর অনুদানের ৩০ কোটি টাকাও তারা পাননি। শুক্রবার সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে প্রার্থনার আহ্বান জানানো হয়েছে স্বজনদের পক্ষ থেকে।

চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির পর কেমিকেল গুদাম সরাতে বা দুর্ঘটনা মোকাবিলায় ঘনবসতি এলাকায় নেয়া হয়নি কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ। ঝুঁকি নির্বাপণের ব্যবস্থাপনা ছাড়াই গুদামজাত হচ্ছে কাঁচামাল। যেসব অভিযান শুরু হয়েছিল সেসব দায়িত্বও ভুলে যেতে বসেছে সংস্থাগুলো।

নিমতলীর ট্র্যাজিডির পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিয়েছিল ১৭ দফা সুপারিশ, চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডের পর স্বল্প ও দ্বীর্ঘ মেয়াদি ৩১ দফা দিয়েছে একই মন্ত্রণালয়।

তদন্ত কমিটির সদস্য বুয়েটের পুর প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, স্বল্পমেয়াদের জন্য হলেও রাসায়নিক ও কাঁচামালের গুদামগুলো আবাসিক এলাকা থেকে দ্রুত স্থানান্তরে অস্থায়ীভাবে পুরান ঢাকাতেই আলাদা ভবন নির্মাণ করা যেতে পারে।

ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়েছে জুরাইনে অস্থায়ী রাসায়নিক পল্লীর কার্যক্রম। নৌ বাহিনীর তত্ত্বাবধানে ৫৪টি ছোট বড় গুদামসহ এটির কাজ শেষে হবে সেপ্টেম্বরে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে চকবাজারের নন্দ কুমার দত্ত রোডের চুড়িহাট্টা ওয়াহিদ ম্যানশনে আগুন লাগে। দাহ্য পদার্থ থাকায় পার্শ্ববর্তী পাঁচটি ভবনে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে পুরো এলাকা পরিণত হয় ধ্বংসস্তুপে। পরে ৭১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আপনি আরও পড়তে পারেন